মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো?
মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো? মোবাইল দিয়ে কি ফ্রিল্যান্সিং করা যায়? মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা ইনকাম করার উপায় কি? মোবাইল দিয়ে কি ফ্রিল্যান্সিং সম্ভব? এরকমের বিভিন্ন প্রশ্ন আমাদের মনে থাকে। তাই আপনাদের সুবিধার জন্য আজকে মোবাইল দিয়ে কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করা যায়। সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই আপনি যদি মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা ইনকাম করতে চান। তাহলে আজকের আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
বর্তমান সময়ে ছোট বড় সকলের জনপ্রিয় একটি পেশা হলো ফ্রিল্যান্সিং। কারণ ফ্রিল্যান্সিং করে ঘরে বসেই টাকা ইনকাম করা যায়। তবে অনেকেই মনে করে ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য ল্যাপটপ বা কম্পিউটার দরকার হয়। কিন্তু আপনি কি জানেন মোবাইল দিয়েও ফ্রিল্যান্সিং করা যাবে।
আপনি হয়তো বিশ্বাস করতে পারছেন না। তবে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে এমন অনেক কাজ রয়েছে যে কাজগুলো শুধুমাত্র মোবাইল দিয়েও করা সম্ভব। তাই আপনাদের সামনে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং এর কোন কোন কাজগুলো করা যায় সে সম্পর্কে আলোচনা করব। চলুন বিস্তারিত তথ্য দেখে নেই।
মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো?
বর্তমান সময়ে আপনি মোবাইল দিয়েও ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন। মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং দুই রকম ভাবে শিখতে পারবেন। একটা ফ্রি ফ্রিল্যান্সিং শেখা ও অপরটা টাকা দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শেখা। তবে সব থেকে ভালো হয় আপনি যদি ইউটিউব থেকে সম্পূর্ণ ফ্রিতে ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করেন।
ইউটিউবে এমন হাজার হাজার ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ক কোর্স রয়েছে। যে কোর্সগুলো করতে কোন টাকা খরচ করতে হবে না। এছাড়াও ইউটিউব ভিডিও থেকে সহজেই ফ্রিল্যান্সিং শেখা যাবে ঘরে বসে।তাই আপনিও মোবাইল দিয়ে youtube এর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে থাকুন।
মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা ইনকাম করার উপায়
দিন যত যাচ্ছে ফিন্যান্সিং এর জনপ্রিয়তা ও চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে টাকা ইনকাম করা যে সম্ভব এটা প্রমাণ করেছে একমাত্র ফ্রিল্যান্সিং।
তাই ছোট বড় সকলেই নিজেকে ফ্রিল্যান্সিং পেশায় যুক্ত করতে চায়। আমরা অনেকেই নিজেকে ফ্রিল্যান্সিং পেশায় যুক্ত করতে চাই। তবে ফ্রিল্যান্সিং পেশায় নিজেকে যুক্ত করার সবথেকে বড় প্রতিবন্ধকতা হলো কম্পিউটার বা ল্যাপটপ।
আমরা বেশিরভাগ মানুষ মনে করি ল্যাপটপ বা কম্পিউটার ছাড়া ফ্রিল্যান্সিং করা যাবে না। তবে আপনাকে এ ভুল ধারণা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আপনার হাতে যদি একটি স্মার্টফোন থাকে। তাহলে ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটারের দরকার নেই। তাই কিভাবে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করা যায় ওকে আলোচনা করব।
কনটেন্ট রাইটিং
মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা ইনকাম করার অন্যতম উপায় হচ্ছে কন্টেন্ট রাইটিং। বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের মধ্যে কন্টেন্ট রাইটিং এর চাহিদা অনেক বেশি। আপনার যদি লেখালেখি করতে ভালো লাগে। আবার আপনি যদি লেখালেখি করতে পছন্দ করেন। তাহলে অনলাইন থেকে লেখালেখি করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
লেখালেখি করে টাকা ইনকাম করার জন্য ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের প্রয়োজন নেই। আপনার হাতে থাকলে স্মার্টফোন দিয়েই কিন্তু কনটেন্ট রাইটিং করতে পারবেন। মোবাইলে টাইপিং করার জন্য গুগল প্লে-স্টোরে থেকে একটা নোটপ্যাড ইন্সটল করুন।
এখন কথা হচ্ছে কোন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে রাইটিং করে টাকা আয় করতে পারবেন তা জানতে হবে। কন্টেন্ট রাইটিং করে টাকা আয় করার ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটপ্লেস হল ফাইভার, আপওয়ার্ক ও ফ্রিল্যান্সার ডটকম। এই কয়েকটি প্লাটফর্মে আপনি ইন্টারন্যাশনাল ভাবে কনটেন্ট রাইটিং করে টাকা আয় করতে পারবেন।
এছাড়াও বাংলা ভাষায় যদি কনটেন্ট রাইটিং করে টাকা আয় করতে চান। তাহলে বাংলাদেশী কিছু ওয়েবসাইট যেমনঃ অর্ডিনারি ডট কম, জে আইটি ডট কম বিডি ও প্রতিবর্তন ডট কম ইত্যাদি। ওয়েবসাইট গুলো থেকে বাংলা ভাষায় কনটেন্ট রাইটিং করে মাসে ৮/১০ হাজার টাকা আয় করা যাবে।
মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা উপার্জনের আরেকটি উপায় হল এফিলিয়েট মার্কেটিং। এফিলিট মার্কেটিং বর্তমান খুবই জনপ্রিয় একটি ডিজিটাল মার্কেটিং এর শাখা। এফিলিয়েট মার্কেটিং হল কোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা প্রোডাক্ট অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করে দেওয়া।
এই সহজ কাজটি আপনি কিন্তু স্মার্ট ফোন দিয়েও করতে পারবেন। তাই হাতে যদি একটি স্মার্ট ফোন থাকে তাহলে আরো ঘরে বসে থাকবেন না। উচিত দ্রুতই এফিলেটয় মার্কেটিং কোর্স করে টাকা ইনকাম করা শুরু করুন।
ইউটিউব থেকে ইনকাম
সবথেকে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম হল ইউটিউব। আপনারও নিশ্চয়ই ইউটিউবে বিভিন্ন রকমের টিউটোরিয়াল দেখে থাকেন। তবে আপনি কি জানেন? এই ইউটিউব থেকে প্রচুর পরিমাণ টাকা ইনকাম করছে বাংলাদেশের অনেক তরুণ তরুণী। আপনার হয়তো বিশ্বাস হচ্ছে না।
অনলাইন থেকে টাকা উপার্জন সবথেকে সহজ উপায় হলো ইউটিউব। মোবাইল দিয়ে ইউটিউব থেকে সহজেই টাকা উপার্জন করবেন। এখন কথা হল ইউটিউব থেকে টাকা আয় করতে হলে কি কি দরকার? ইউটিউব থেকে টাকা উপার্জন করার জন্য একটি ভালো মানের স্মার্টফোন ও নিজের দক্ষতা থাকতে হবে।
আমাদের দেশের হাজার হাজার ইউটিউবার আছে,যারা শুধু মোবাইল ফোন দিয়ে ভিডিও তৈরি করে প্রত্যেক মাসে অনেক টাকা ইনকাম করছে। আপনিও হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে কিন্তু ভিডিও তৈরি করে ইউটিউব থেকে টাকা আয় করতে পারবেন।
ইউটিউব থেকে টাকা ইনকামের পূর্বশর্ত হলো ১ হাজার সাবস্ক্রাইবার ও চার হাজার ঘন্টা ওয়াচ টাইম লাগবে। এই দুইটি শর্ত আপনি যদি পূরণ করতে পারেন। তাহলে গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে ইউটিউব থেকে টাকা আয় হবে।
বর্তমান সময়ে মোবাইল দিয়েও ভালো মানের ইউটিউব ভিডিও তৈরি করা যায়। তবে এর জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে ভিডিও এডিটিং শিখতে হবে। যে ব্যক্তি ভিডিও এডিটিং এ ভালো,তার ভিডিও তত বেশি ভাইরাল হবে। তাই আপনিও ভালোভাবে ভিডিও এডিটিং শিখে স্মার্ট ফোন দিয়ে ইউটিউব ভিডিও তৈরি করুন। তাহলে আপনিও দেখবেন খুব অল্প দিনের মধ্যে আপনার ইউটিউব চ্যানেল ভাইরাল হয়ে যাবে।
ব্লগিং
মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করা যায় ব্লগিং করে। বর্তমান মানুষ অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের টিপস ও ট্রিক পড়ে। এ কারণে ব্লগিং এর চাহিদা অনেক বেশি। আপনিও হাতে থাকা স্মার্টফোনের মাধ্যমে ব্লগিং করতে পারবেন। সুন্দর একটি ওয়েবসাইট তৈরি ও এরপরে কনটেন্ট পাবলিশ করা।
এই কাজ গুলো মোবাইল দিয়ে সহজেই করা যাবে। আমি নিজেও মোবাইল দিয়েই ব্লগিং শুরু করেছিলাম। তাই আপনিও ব্লগিং করতে পারেন। ব্লগিং করার জন্য খুব বেশি অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নেই। তবে কন্টেন্ট রাইটিং বা লেখালেখি করার অভ্যাস থাকতে হবে।
গ্রাফিক্স ডিজাইন
গ্রাফিক্স ডিজাইন ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের সবথেকে জনপ্রিয় একটি শাখা। তবে গ্রাফিক্স ডিজাইন সেক্টর এর সকল কাজ আপনি মোবাইল দিয়ে করতে পারবেন না। কিন্তু কিছু কিছু কাজ রয়েছে যেগুলো স্বাচ্ছন্দ্যে মোবাইল ফোন দিয়েও করা সম্ভব।
কোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের লোগো,ব্যানার, ফেসবুক কভার পেজ ও ফেসবুক পেজের লোগো মোবাইল দিয়ে মোটামুটি ভাবে ডিজাইন করা যাবে। মোবাইল দিয়ে গ্রাফিক্স ডিজাইন কিছু সফটওয়্যার হলো Canva, Adobe Photoshop, Logo maker, Photo Editor ইত্যাদি।
তবে প্রফেশনাল ভাবে আপনি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইন করতে চান। তাহলে অবশ্যই কম্পিউটার বা ল্যাপটপের দরকার হবে। কিন্তু এ কথাও সত্য অনেকেই মোবাইল দিয়েও গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কিছু কিছু কাজ করে টাকা আয় করছে।
Language Translator
আপনি যদি বিভিন্ন দেশের ভাষায় পারদর্শী হতে থাকেন। তাহলে ভাষা অনুবাদক পেশা শুধুমাত্র আপনার জন্য। বর্তমান সময় ভাষা অনুবাদক এর কাজ করে অনেক বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সাররা টাকা উপার্জন করছে। তাই আপনিও ভাষা অনুবাদক হিসেবে কাজ করতে পারেন। এ কাজের জন্য আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোনই যথেষ্ট।
পরিশেষে
আশা করি,মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো ও মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করার উপায় সম্পর্কে আপনি সঠিক তথ্য পেয়েছেন। বর্তমান সময়ে ইউটিউব থেকে সম্পূর্ণ ফ্রিতে আপনি ফ্রিল্যান্সিং এর যাবতীয় কাজ শিখতে পারবেন। তাই ঘরে যদি বেকার অবস্থায় বসে থাকেন। তাহলে আপনি আর সময় নষ্ট করবেন না। খুব তাড়াতাড়ি ইউটিউবের সাহায্যে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শুরু করতে পারেন।
মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে কি কি কাজ করা যায় তা উপরে বর্ণনা করার চেষ্টা করেছি। উপরের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী আপনি যদি স্মার্টফোন দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শুরু করেন। তাহলে ইনশাআল্লাহ অল্প দিনের মধ্যেই আপনি সেক্টরের সফলতা অর্জন করতে পারবেন।
এরপরও যদি মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে কোন রকম সমস্যা হয়। তাহলে অবশ্যই আমাদের ব্লগে কমেন্ট করবেন। আমরা আপনাকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করব। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।