বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২৩

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২৩

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম। বাংলাদেশের সব থেকে বড় মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মধ্যে বিকাশ অন্যতম। বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রতিদিন প্রায় কোটি কোটি টাকা লেনদেন হয়ে থাকে। দীর্ঘ ১০ বছর বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং বাংলাদেশের মানুষদের সেবা দিয়ে এসেছে। আমরা প্রতিদিন যে সকল বিকাশ দোকান থেকে টাকা উত্তোলন করি, সেগুলো বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট।

আপনি যদি একটি ফ্লেক্সিলোটডের ব্যবসা করতে চান। তাহলে আপনার বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট তৈরি করতে হবে। বিকাশ এজেন্ট একাউন্টের মাধ্যমে মানুষ টাকা উত্তোলন করে থাকে। এছাড়াও যারা বিকাশের মাধ্যমে টাকা উপার্জন করতে চাচ্ছেন, তাদের জন্য বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম জানতে হবে। আজকে আমরা কিভাবে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করবো।

 

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম

আপনার নিশ্চয়ই ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসা করার আগ্রহ রয়েছে। এই কারণে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম কানুন জানতে চাচ্ছেন। বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলা সম্পর্কে আমাদের মাঝে বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন রয়েছে। আপনার যদি এরকম বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট নিয়ে প্রশ্ন থাকে। তাহলে আজকের আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়বেন।

অনেকেই আমাদের ব্লগে কমেন্ট করেন, বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম কি, বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে, কোথায় গিয়ে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে হয় ইত্যাদি। আপনার মনে যদি এরকম কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে বিকাশ এজেন্ট সম্পর্কিত আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়বেন।

 

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য কি কি লাগবে?

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য আপনার কিছু কাগজপত্র রেডি করতে হবে। বিকাশের শর্ত মতে আপনাকে কিছু ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে। অবশ্যই বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট এর জন্য কাগজপত্র গুলো সঠিক থাকতে হবে। বিকাশ এজেন্ট একাউন্টের জন্য যে সকল কাগজপত্র লাগবে তা নিম্নরূপঃ

প্রথমে আপনাকে ফ্লেক্সিলোড দোকান করার স্থান নির্বাচন করতে হবে। বাজারে ভালো একটা জায়গা নির্বাচন করুন।
দোকানের জায়গার নির্বাচন করার পর, একটা দোকান তৈরি করতে হবে।
ইউনিয়ন পরিষদ/ পৌরসভা কর্তৃক দোকানের ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করতে হবে।
ট্রেড লাইসেন্স অবশ্যই হালনাগাদ ও চেয়ারম্যান কর্তৃক সিল ও স্বাক্ষর থাকতে হবে।
আবেদনকারীর অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্র থাকতে হবে। জাতীয় পরিচয় পত্রের রঙিন ফটোকপি।
টিন সার্টিফিকেটের রঙিন ফটোকপি লাগবে। অবশ্যই সার্টিফিকেট সত্যায়িত হতে হবে।
আবেদনকারীর পাঁচ কপি রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে। ছবিগুলো অবশ্যই সদ্য তোলা হতে হবে।
এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য একটা পোস্ট পেইড সিম লাগবে।

উপরোক্ত এই কয়েকটি কাগজ পত্র দিয়ে আপনি বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন। এছাড়াও আরো যদি কোন কাগজপত্র লাগে, তাহলে বিকাশ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। বিকাশ কর্তৃপক্ষের সাথে আপনি দুই ভাবে যোগাযোগ করতে পারবেন।

বিকাশ হেল্পলাইন নাম্বারে ফোন দিয়ে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। আবার বিকাশ এজেন্ট অফিসে গিয়েও যোগাযোগ করতে পারেন। এটা নির্ভর করবে সম্পূর্ণ আপনার সুবিধা ও ইচ্ছার উপর।

 

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট তৈরি করার শর্ত

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য উপরের ডকুমেন্টগুলো আপনার প্রয়োজন। শুধু উপরের ডকুমেন্টগুলো দিয়েই আপনি বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে পারবেন না। আপনাকে বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং এর কিছু শর্ত মানতে হবে। যে সকল এজেন্ট ব্যক্তিরা বিকাশের শর্ত মানতে পারবে, তাদের বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার পারমিশন দেয়া হবে।

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার প্রথম শর্ত হলো, আপনাকে প্রথমে এক লক্ষ টাকা জমা দিতে হবে। অর্থাৎ, আপনার এজেন্ট একাউন্টে এক লক্ষ টাকা তুলতে হবে। আপনার এজেন্ট একাউন্ট এর ব্যালেন্স সর্বনিম্ন ৭০০০ থাকতে হবে। ৭০০০ টাকার নিচে ব্যালেন্স খরচ করা যাবে না।

আপনার দোকানে প্রতিদিন বিকাশ এজেন্ট ব্যাংক এর প্রতিনিধি দেখা করতে আসবে। আপনাকে প্রতিদিন নূন্যতম ২০০০ টাকা লেনদেন করতে হবে। আপনি চাইলে ২০০০ টাকা ক্যাশ আউট করতে পারেন, আপনারা চাইলে ২০০০ টাকা লোড করে নিতে পারেন।

আপনার দোকান থেকে প্রতিমাসে ন্যূনতম পাঁচটি বিকাশ পার্সোনাল অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। তবে বর্তমানে এই শর্ত কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। কারণ এখন সবাই ঘরে বসে বিকাশ অ্যাপ এর মাধ্যমে পার্সোনাল অ্যাকাউন্ট তৈরি করে। কিন্তু আপনি যদি দোকানে বসে পার্সোনাল অ্যাকাউন্ট তৈরি করে দেন, তাহলে আপনাকে এক্সট্রা কিছু কমিশন দেয়া হবে।

 

অনলাইনে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম

যারা খুব অল্প সময়ে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে চাচ্ছেন, তারা খুব সহজে অনলাইনে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে পারেন। অনলাইনের মাধ্যমে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলা একদম সহজ। অনলাইনে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম কানুন হলোঃ

(১) ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য প্রথমে বিকাশ ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।

(২) তারপর আপনাকে বিকাশ এজেন্ট অ্যাকাউন্ট অপশন খুঁজে বের করতে হবে, এখন আপনাকে বিকাশ এজেন্ট অ্যাকাউন্ট অপশন এ ক্লিক করতে হবে।

(৩) ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য আপনার উপরোক্ত কাগজপত্র গুলো স্ক্যান করে রাখতে হবে।

(৪) তারপর পর্যায়ক্রমে আবেদনকারীর ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি/ড্রাইভিং লাইসেন্স/পাসপোর্ট এর রঙিন ফটোকপি জমা দিতে হবে।

(৫) আপনার ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স ও টিন সার্টিফিকেট সাবমিট করতে হবে। অবশ্যই ট্রেড লাইসেন্স ও টিন সার্টিফিকেট সত্যায়িত থাকতে হবে।

(৬) আবেদনকারীর রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ছবি ও দোকানের নাম ঠিকানা দিতে হবে।

আবেদনকারীর তথ্যগুলো দিয়ে ফরম ফিলাপ করতে হবে। সঠিকভাবে বিকাশ এজেন্ট ফরম ফিলাপ করার পর, আপনাকে জমা দিন অপশনে ক্লিক করতে হবে। তারপর বিকাশ কর্তৃপক্ষ আপনার তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করবে। সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহের মধ্যে আপনার একাউন্ট তৈরি হয়ে যাবে।

 

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট এর সুবিধা

আমরা ইতিমধ্যে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম জানতে পেরেছি। কিন্তু আপনি কেন বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলবো এটা জানতে হবে। বিকাশ একাউন্ট খোলার কি কি সুবিধা রয়েছে তা জানা দরকার। আপনি যদি বাজারে ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসা করতে চান, তাহলে আপনাকে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে হবে।

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট এর মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন রকম ভাবে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করার প্রধান উৎস হল ক্যাশ আউট। আপনার এজেন্ট একাউন্ট থেকে যতজন মানুষ ক্যাশ আউট করবে, আপনার তত বেশি টাকা ইনকাম হবে।

প্রতি এক হাজার টাকায় আপনার ৪.৫০ টাকা ইনকাম হবে। তাহলে আপনি যদি প্রতিদিন এক লক্ষ টাকা ক্যাশ আউট করতে পারেন, তাহলে বিকাশ থেকে ৪৫০ টাকা ইনকাম হবে। এছাড়াও বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট থেকে পল্লী বিদ্যুৎ বিল দিতে পারবেন। পল্লী বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার মাধ্যমে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট থেকে অনেক টাকা উপার্জন করার যায়।

এছাড়াও আমরা প্রতিদিন প্রায় লক্ষ লক্ষ টাকা বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট এর মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে থাকে। টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রেও বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট এর প্রচুর পরিমাণ টাকা লাভ হয়। এছাড়াও বিকাশ এজেন্ট একাউন্টে আরো বিভিন্ন রকমের সুবিধা রয়েছে।

 

বিকাশ এজেন্ট এপস

যারা বিকাশ এজেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেন, তাদের লেনদেনকে সহজ করার জন্য বিকাশ এজেন্ট অ্যাপ চালু করা হয়েছে। আপনি খুব সহজে বিকাশ এজেন্ট ব্যবহার করে টাকা লেনদেন করতে পারবেন। বিকাশ এজেন্ট অ্যাপস এর মাধ্যমে টাকা লেনদেন করা একদম সহজ।

এছাড়া বিকাশ এজেন্ট অ্যাপ এর বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে। আপনি মাত্র এক ক্লিকের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করতে পারবেন। এছাড়াও বিদ্যুৎ বিল, ইন্টারনেট বিল পরিশোধ করা একদম সহজ। তাই আপনি এখনই বিকাশ এজেন্ট অ্যাপ ডাউনলোড করে ফেলুন।

 

পরিশেষে
আশা করি,বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম কানুন সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনার যদি ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসা করার ইচ্ছা থাকে, তাহলে আপনাকে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে হবে। কারণ আমাদের দেশের শতভাগ মানুষ বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে। এছাড়াও বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট এর সুবিধা অনেক বেশি।

বর্তমান সময়ে সকল মানুষ টাকা লেনদেন করার জন্য বিকাশ ব্যবহার করে থাকে। তাই আপনার মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসাকে লাভবান করার জন্য বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে হবে। বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য আপনার কিছু শর্ত মানতে হবে। শর্ত গুলো পূরণ করার পর, আপনার বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট তৈরি হয়ে যাবে। এছাড়াও বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের ব্লগে কমেন্ট করবেন।

 

আরো পড়ুন: ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার উপায়

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *