অফিসিয়াল ফোন চেনার উপায়

অফিসিয়াল ফোন চেনার উপায়

অফিসিয়াল ফোন চেনার উপায়

অফিসিয়াল ফোন চেনার উপায়: বর্তমান সময়ে মোবাইল ফোন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ অংশ। মোবাইল ফোন ছাড়া যেন এ জীবন কল্পনা করা যায় না। যখনি আমাদের মোবাইল ফোনের দরকার হয়। তখন বিভিন্ন মার্কেট থেকে মোবাইল ফোন কিনে থাকি। তবে আপনি কি জানেন, আপনার ক্রয়কৃত মোবাইল ফোন অফিশিয়াল না আনঅফিসিয়াল।

আপনারা ক্রয়কৃত মোবাইল ফোনটি যদি আনঅফিসিয়াল হয়। তাহলে কিন্তু পরবর্তীতে আপনি সমস্যার মধ্যে পড়তে পারেন। এ কারণে অবশ্যই আপনাকে অফিসিয়াল ফোন কিনতে হবে। তাই কিভাবে অফিসিয়াল ফোন চিনতে পারবেন সে সম্পর্কে আজকে আমরা আলোচনা করব। চলুন অফিসিয়াল ফোন চেনার কি কি উপায় রয়েছে সেটা দেখে নেই। 

অফিসিয়াল ফোন কি? 

যে ফোনগুলো ব্যবহার করা বৈধ, বিআরটিসি ডাটাবেজে নিবন্ধিত আছে ও সরকারি ট্যাক্স প্রদান করা হয়েছে সেগুলোই মূলত অফিশিয়াল ফোন। 

অফিসিয়াল ফোন চেনার উপায়

শুধুমাত্র একটি এসএমএস এর মাধ্যমে আপনার ফোনটি অফিসিয়াল না আনঅফিসিয়াল তা সহজেই যাচাই করতে পারবেন। এসএমএস এর মাধ্যমে কিভাবে অফিসিয়াল ফোন চিনবেন তা নিচে বর্ণনা করা হলো। 
ধাপ ১ঃ সর্বপ্রথমে আপনার ফোনের ১৫ ডিজিটের IMEI নাম্বার সংগ্রহ করতে হবে। এর জন্য আপনার গিয়ে *#06# ডায়াল করুন। তারপর কিছু সময় অপেক্ষা করার পরে ১৫ ডিজিটের IMEI নাম্বার আপনার সামনে চলে আসবে। 
ধাপ ২ঃ এখন সরাসরি আপনার ফোনের মেসেজ অপশনে যান। তারপর টাইপ করুন KYD [স্পেস] ১৫ ডিজিটের সেই IMEI নাম্বার ও পাঠিয়ে দিন ১৬০০২ নাম্বারে। 
ধাপ ৩ঃ এরপর কিছুক্ষণ আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে। আপনাকে ফিরতি মেসেজ এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। আপনার হাতে থাকা ফোনটি অফিসিয়াল নাকি আনঅফিসিয়াল।
নতুন অথবা পুরাতন ফোন ক্রয় করার আগে অবশ্যই আপনাকে অফিশিয়াল না আনঅফিসিয়াল সেটা যাচাই করে নিতে হবে। উপরের তিনটি ধাপ সম্পূর্ণ করে আপনি যদি ফোন ক্রয় করেন। তাহলে আপনার ক্রয়কৃত ফোনটি কখনোই আনঅফিসিয়াল ফোন হবে না।

স্যামসাং অফিসিয়াল ফোন চেনার উপায় 

আপনি যখন স্যামসাং ফোন কিনতে যাবেন। তখন অবশ্যই যাচাই করা দরকার স্যামসাং ফোনটি অফিসিয়াল না আনঅফিসিয়াল। স্যামসাং অফিসিয়াল ফোন চেনার বেশ কয়েকটি কার্যকরী উপায় রয়েছে। 
১. স্যামসাং ফোনটি অফিসিয়াল কিনা তা দেখার জন্য সরাসরি ক্লিক করুন এই https://www.imei.info/phonedatabase/phones-samsung/ লিংকে। এখন IMEI কোড লিখে Check বাটনে ক্লিক করুন। যদি আপনার ফোনটি অফিসিয়াল হয় তাহলে কিছু তথ্য দেখাবে। আর যদি আনঅফিসিয়াল হয় তাহলে কোন তথ্যই দেখাবে না। 
স্যামসাং অফিসিয়াল ফোন চেনার উপায়
স্যামসাং অফিসিয়াল ফোন চেনার উপায়
২. স্যামসাং ফোনের বাহ্যিক কিছু বিষয় পর্যবেক্ষণ করেও ফোনটি অফিসিয়াল না আনঅফিসিয়াল তার চেক করতে পারবেন। এজন্য ফোনের “স্যামসাং” লোগোতে হাতের নখ দিয়ে আঁচড়/ ঘষতে থাকুন। এখন যদি “স্যামসাং” লোগো উঠে যায় তাহলে এটা আনঅফিসিয়াল ফোন। আর যদি লোগো ঘষলেও কোন সমস্যা না হয় তাহলে এটা অফিসিয়াল ফোন।
এছাড়াও অফিসিয়াল স্যামসাং ফোনের চারপাশে কোনো রঙ থাকেনা। কিন্তু আনঅফিসিয়াল স্যামসাং ফোনের চারদিকে আপনি কালো রঙের দাগ দেখতে পারবেন।

রিয়েলমি অফিসিয়াল ফোন চেনার উপায়

আপনি খুব সহজেই রিয়েলমি অফিসিয়াল ফোন চিনতে পারবেন। রিয়েলমি অফিসিয়াল ফোন চেনার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে IMEI কোড বের করতে হবে। তারপর নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন। 
১. রিয়েলমি ফোন আসল না নকল তা জানার জন্য realme.com/global/support/phonecheck এই লিংকে ক্লিক করুন। তারপর একটি খালি বক্স আসবে। এই বক্সে আপনাকে IMEI কোড দিতে হবে। তারপর Check অপশনে ক্লিক করুন। এখনো যদি আপনার সামনে ফোন সম্পর্কিত কিছু তথ্য আসে। তাহলে অবশ্যই আপনার ফোনটি আসল। আর যদি কোন তথ্য না আসে তাহলে ফোনটি নকল। 
রিয়েলমি অফিসিয়াল ফোন চেনার উপায়
রিয়েলমি অফিসিয়াল ফোন চেনার উপায়
২. তারপর রিয়েলমি ফোনের লোগোতে আঁচড় / ঘষা দিতে হবে। যখন আপনি লোগোতে আঁচড় বা ঘষা দিবেন, তখন লোগো যদি উঠে যায়। তাহলে বুঝতে হবে এটি নকল রিয়েলমি ফোন। আর যদি ঘষা দেওয়ার পরেও লোগোটি ঠিক একই রকম থাকে, তাহলে এটি আসল রিয়েলমি ফোন। 
এছাড়াও রিয়েলমি ফোনটি যদি আসল হয় তাহলে আপডেট ভার্সনের হবে। দেখা যায় নকল রিয়েলমি ফোনের দাম তুলনামূলকভাবে অনেক কম। তাই নামের তারতম্য দেখেও রিয়েলমি ফোন আসল না নকল চেনা যাবে। 

ভিভো অফিসিয়াল ফোন চেনার উপায়

দেশের অন্যতম প্রধান একটি মোবাইল ব্যান্ড হলো ভিভো। ভিভো ফোন কেনার আগে অবশ্যই আপনাকে যাচাই করে নিতে হবে ফোনটি আসল কিনা। ভিভো ফোন চেক করার জন্য vivo.com/en/support/IMEI লিংকে ক্লিক করুন। 
ভিভো অফিসিয়াল ফোন চেনার উপায়
ভিভো অফিসিয়াল ফোন চেনার উপায়
লিংকে প্রবেশ করার পর আপনার সামনে একটি খালি বক্স আসবে। এখন এই বক্সে ফোনের IMEI নাম্বার দিতে হবে। IMEI নাম্বার সঠিকভাবে দেওয়ার পর Check বাটনে ক্লিক করুন। 
অতঃপর আপনার সামনে যদি ভিভো ফোনের কিছু তথ্য আসে। তাহলে বুঝে নিন এটা ভিভো অফিসিয়াল ফোন। আর যদি কোন তথ্য না আসে। তাহলে বুঝে নিতে হবে এটা আনঅফিসিয়াল একটি ফোন। 
এছাড়াও ভিভো ফোন কেনার আগে “Vivo” লোগোতে একটু ঘষা দিন। ঘষা দেওয়ার পর ফোনের লোগোর মধ্যে যদি কোন পার্থক্য দেখেন। অর্থাৎ, লোগো উঠে গেছে বা মলিন হয়ে গেছে। তাহলে এটা অবশ্যই আনঅফিসিয়াল ফোন। 
আবার যে ভিভো ফোনটি কিনতে চাচ্ছেন, তার নাম তুলনামূলকভাবে যদি কম হয়। সেক্ষেত্রেও এ ফোনটি নকল হবার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। এছাড়াও আসল ভিভো ফোন আপডেট ভার্সনের থাকবে। 

অফিসিয়াল আনঅফিসিয়াল ফোনের পার্থক্য

অফিসিয়াল আনঅফিসিয়াল ফোনের অনেক পার্থক্য আছে। অফিসিয়াল ফোন হলো সেইসব ফোন যেগুলো BRTC ডাটাবেজে নিবন্ধন করা আছে। BRTC ডাটাবেজে যে সকল ফোন নিবন্ধিত আছে সবগুলোই বৈধ ফোন। এই ডাটা ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার। এছাড়াও অফিসিয়াল ফোন সরকারকে ট্যাক্স প্রদান করেছে।
অন্যদিকে যেসব ফোনগুলো BRTC ডাটাবেজে নিবন্ধন করা হয়নি এগুলোই মূলত আনঅফিসিয়াল ফোন। এই ফোনগুলো অবৈধভাবে বিদেশ থেকে আমদানি করে সরকারকে ট্যাক্স না দিয়ে বাজারে বিক্রি করা হয়। 

আনঅফিসিয়াল ফোন অফিসিয়াল করার উপায়

আপনার ফোনটি চেক করার পর যদি জানতে পারেন ফোনটি আনঅফিসিয়াল। তাহলে অবশ্যই আপনাকে অতি দ্রুতই ফোনটিকে আনঅফিসিয়াল থেকে অফিশিয়ালে পরিণত করতে হবে। কারণ আনঅফিসিয়াল ফোন নিয়ে পরবর্তীতে আপনি বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। 
অন অফিসিয়াল ফোন অফিসিয়াল করার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে বিআরটিসি অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। তারপর তাদের নির্দেশ অনুযায়ী সকল কাগজপত্র জমা দিতে হবে। কিছুদিন অপেক্ষা করার মাধ্যমে আপনার নকল ফোনটি আসল ফোনে পরিণত হবে। 
পরিশেষে
আশা করি, অফিসিয়াল ফোন চেনার উপায় সম্পর্কে আপনি সঠিক তথ্য পেয়েছেন। বর্তমান সময়ে বিদেশ থেকে সরকারি নিবন্ধন ছাড়া অনেক ফোন আমাদের দেশে আমদানি করা হচ্ছে। তাই মোবাইল ফোন কেনার আগে অবশ্যই আমাদের যাচাই করে নেওয়া উচিত। 
কারণ আপনার ক্রয়কৃত ফোনটি যদি আনঅফিসিয়াল হয়ে থাকে। তাহলে পরবর্তীতে আপনি অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। তাই উপরের অফিশিয়াল ফোন চেনার সহজ উপায় সমূহ অবলম্বন করে। যেকোন ফোন যাচাই করে ক্রয় করবেন। ধন্যবাদ। 
আরো জানুন:

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *