এফিলিয়েট মার্কেটিং কি এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো

এফিলিয়েট মার্কেটিং কি?  এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো?

এফিলিয়েট মার্কেটিং কি ?  এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো?

 

এফিলিয়েট মার্কেটিং কি? এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো ও এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা কি কি? এ নিয়ে বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন আমাদের থাকে। তাই আপনাদের সুবিধার জন্য আজকে আমরা এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে অবশ্যই আপনাকে আজকের আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

অনলাইন থেকে টাকা উপার্জনের যে কয়েকটি সহজ মাধ্যম রয়েছে তার মধ্যে সবথেকে সহজ মাধ্যম হলো এফিলিয়েট মার্কেটিং। এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আপনি খুব সহজে ঘরে বসে টাকা উপার্জন করতে পারবেন। তবে অনেকের এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকার কারণে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর কাজ শুরু করতে পারছেন না।

তাই আজকে আমরা সে সকল পাঠকদের সুবিধার্থে এফিলিয়েট মার্কেটিং কি ও এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব। ইনশাল্লাহ, আজকের আর্টিকেল আপনি যদি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে অবশ্যই এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে টাকা আয় করতে পারবেন। চলুন আমাদের মূল আলোচনা শুরু করি।

 

এফিলিয়েট মার্কেটিং কি?

অনলাইনে মাধ্যমে কোন প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির কোন পণ্য বা প্রোডাক্ট বিক্রি করে দেওয়া ও প্রতিটি বিক্রির জন্য যে কমিশন দেয়া হয় এটাই এফিলিয়েট মার্কেটিং।

সহজ ভাবে বলতে গেলে, ধরুন daraz.com ওয়েবসাইটের সাথে আপনি এফিলিয়েট অ্যাকাউন্ট তৈরি করেছেন। এখন দারাজ কোম্পানির কোন প্রোডাক্ট/ পণ্য আপনি ২০০০ টাকায় বিক্রি করলেন। যদি ২০% কমিশন দেয়। তাহলে আপনার আয় হবে ২০০ টাকা। এটাই মূলত এফিলিয়েট মার্কেটিং।

 

এফিলিয়েট মার্কেটিং কেন করবো?

বর্তমান সময়ে অনলাইনে কেনাকাটার হার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনলাইনে কেনাকাটার জনপ্রিয়তার পিছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। প্রথমত নিজের পছন্দ অনুযায়ী যেকোন প্রোডাক্ট ক্রয় করা যায়। দ্বিতীয়ত যেকোনো প্রোডাক্ট অনলাইনে ক্রয় করে হোম ডেলিভারি সুযোগ পাওয়া যায়।

এ বেশ কয়েকটি কারণে অনলাইন কেনাকাটা অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ভবিষ্যতে এ জনপ্রিয়তার হার আরো বেড়েই চলবে। এছাড়াও সকল ধরনের প্রতিষ্ঠান এখন অনলাইন ভিত্তিক হয়ে যাচ্ছে। যে কারণে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জনপ্রিয়তাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

অনলাইনে যেকোনো সেক্টর থেকে টাকা আয় করতে হলে অবশ্যই আপনাকে কিছু টাকা ইনভেস্ট করতে হবে। তবে সব থেকে মজার বিষয় হলো এফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য এক পয়সাও আপনাকে ইনভেস্ট করতে হবে না। সম্পূর্ণ বিনা পুঁজির মাধ্যমে এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আপনি অনেক টাকা আয় করতে পারবেন।

এছাড়াও আরেকটি সুবিধা হল হাতে থাকা স্মার্টফোনের মাধ্যমেও এফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায়। তাই আপনি যদি দীর্ঘদিন ধরে ঘরে বেকার অবস্থায় বসে থাকেন। তাহলে আপনার জন্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সবথেকে ভালো হবে।

এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো?

আপনাকে আগেই বলেছি এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার জন্য আপনাকে কোন রকম ইনভেস্ট করতে হবে না। শুধু আপনার কাছে একটি স্মার্ট ফোন থাকলেই হবে। স্মার্টফোন থাকার পাশাপাশি নিচের আইডি গুলো যদি অনুসরণ করতে পারেন। তাহলে ইনশাল্লাহ এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আপনি অনেক টাকা আয় করতে পারবেন। এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবেন তা দেখে নিন।

ধাপ ১ঃ এফিলিয়েট মার্কেটিং যেহেতু অনলাইন ভিত্তিক। এ কারণে আপনার অবশ্যই অনলাইনে বিভিন্ন সাইটে প্রোফাইল থাকতে হবে। অর্থাৎ, অনলাইনে যে সকল প্লাটফর্মে মানুষ বেশি এক্টিভ থাকে। সে সকল প্লাটফর্মে নিজের জায়গা দাঁড় করাতে হবে।

এর মধ্যে রয়েছে ওয়েবসাইট, ইউটিউব, ফেসবুক পেজ, ফেসবুক গ্রুপ ও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া। মূলত এই কয়েকটি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমেই আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন।

এ কারণে আপনাকে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। তারপর একটি সুন্দর ইউটিউব চ্যানেল খুলতে হবে। এখন একটি ফেসবুক পেজ ও ফেসবুক গ্রুপ তৈরি করুন। এই চারটি জায়গায় আপনার যদি ভালো পরিমাণ ভিজিটর বা অনুসারী হয়। তাহলে এফিলিয়েট মার্কেটিং করা আপনার জন্য অনেক সহজ হবে।

 

ধাপ ২ঃ উপরোক্ত চারটি জায়গায় একাউন্ট তৈরি করার পর, এখন কাজ হল আপনাকে বিভিন্ন কোম্পানির affiliate program এ যুক্ত হতে হবে। বিভিন্ন এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মধ্যে রয়েছেঃ Amazon, ebay, Ali Express, Evanto, Namecheap , Bluehost, Godaddy, Themeforest, Daraz, 10 minute school ইত্যাদি। এ সকল ওয়েবসাইটে আপনি এফিলিয়েট প্রোগ্রামে যুক্ত হতে পারেন।

 

ধাপ ৩ঃ অ্যাফিলিট প্রোগ্রামে যুক্ত হবার পরে এখন কাজ হলো তাদের পণ্য বা প্রোডাক্টগুলো আপনাকে প্রমোট করতে হবে। অর্থাৎ ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক পেজ ও ফেসবুক গ্রুপে অ্যাফিলিয়েট প্রোডাক্টগুলোর লিংক শেয়ার করতে হবে।

 

ধাপ ৪ঃ আপনি যে প্রোডাক্টের সাথে এফিলিয়েট করতে চাচ্ছেন। সেই প্রোডাক্ট এর লিংক বেশি বেশি করে ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক পেজ ও ফেসবুক গ্রুপে শেয়ার করতে হবে। যত বেশি শেয়ার করবেন তত বেশি ইনকাম করার চান্স বেশি থাকবে।

 

ধাপ ৫ঃ সর্বশেষ আপনার শেয়ার কৃত লিংকের মাধ্যমে কোন ব্যক্তি যদি সেই প্রোডাক্ট ক্রয় করে। তাহলে আপনি প্রতিটা প্রোডাক্ট এর জন্য আলাদা আলাদা কমিশন পাবেন।

উপরোক্ত এই পাঁচটি ধাপ সম্পন্ন করে আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে পারেন। এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করা খুব কঠিন বিষয় না। তবে সঠিক গাইড লাইন মেনে চলতে হবে। উপরের গাইডলাইন মতো যদি আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করেন। তাহলে আপনার জন্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং অনেকটা সহজ হয়ে যাবে।

এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করবো কিভাবে?

বর্তমান সময়ে হাজার হাজার মানুষ এফিলিয়েট মার্কেটিং করে অনেক টাকা আয় করছে। এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে টাকা আয় করা খুব কঠিন কোন বিষয় না। তবে সঠিক গাইডলাইন আপনাকে মানতে হবে।

এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে বেশি টাকা আয় করতে হলে আপনার ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজে ফলোয়ার বেশি থাকতে হবে।

ধরুন আপনার ইউটিউব চ্যানেলে প্রায় ১০ হাজার সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। এখন আপনি যদি কোন প্রোডাক্ট রিভিউ রিলেটেড ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করেন। তাহলে যদি ১০০ জন ব্যক্তি আপনার ভিডিও দেখে প্রোডাক্ট ক্রয় করেন। তাহলে আপনি কিন্তু এখন থেকে টাকা আয় করতে পারছেন।

ঠিক তেমনিভাবে ফেসবুক পেজে যদি আপনার হাজার হাজার ফলোয়ার থাকে। যেকোনো একটি রিভিউ সম্পর্কিত ভিডিও আপলোড করার পরে, আপনার ডেসক্রিপশন লিংক থেকে অনেক মানুষ কিন্তু প্রোডাক্ট ক্রয় করবে।

এ কারণে এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার আগে অবশ্যই আপনার ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজের ফলোয়ার যেন বেশি থাকে এ বিষয়ে ভাবতে হবে। যার যত বেশি ফ্যান ও ফলোয়ার, তার তত বেশি এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে ইনকাম।

এফিলিয়েট মার্কেটিং সাইট

এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবেন তা এখন জানতে পেরেছেন। এখন আপনার জানা দরকার অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সাইট কোনগুলো। অর্থাৎ, কোন সাইট গুলোর মাধ্যমে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে টাকা আয় করতে পারবেন।

  • Amazon
  • ebay
  • Ali Express
  • Evanto
  • Namecheap
  • Bluehost
  • Godaddy
  • Themeforest
  • Daraz
  • 10 minute school
  • Putulhost
  • Exonhost
  • Othoba
  • Bdshop
  • SOHOJ
  • SHOPNOBARI
  • BOHUBRIHI ONLINE COURSE
  • DIANAHOST

উপরের সবগুলো ওয়েবসাইটে আপনি এফিলিয়েট প্রোগ্রামে যুক্ত হতে পারবেন। বাংলাদেশে এমন অনেক এফিলিয়েট সাইট রয়েছে। যা থেকে প্রচুর পরিমাণ টাকা আয় করা যায়।

 

এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয় করা টাকা কিভাবে তুলবেন?

আপনি যদি বাংলাদেশী সাইটের সাথে এফিলিয়েট প্রোগ্রামের যুক্ত হন। তাহলে বিকাশ বা নগদের মাধ্যমে টাকা তুলতে পারবেন। আবার যদি ইন্টারন্যাশনাল ওয়েবসাইট থেকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে টাকা আয় করতে চান। এক্ষেত্রে আপনার ব্যাংক একাউন্ট বা মাস্টার কার্ড লাগবে।

পরিশেষে
তাহলে আজকে আমরা শিখলাম এফিলিয়েট মার্কেটিং কি ও এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করতে হয়। আশা করব, আজকের আলোচনা থেকে আপনি অবশ্যই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে সঠিক তথ্য পেয়েছেন। আপনি যদি এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে চান।

তাহলে অবশ্যই আপনাকে উপরের দিক নির্দেশনা গুলো মেনে চলতে হবে। কারণ সঠিক দিকনির্দেশনা ছাড়া এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে টাকা আয় করা অনেক কঠিন। তো বন্ধুরা, এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কিত পর্বটি আপনার কেমন লাগলো তা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

 

আরো জানুন: ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কত সময় লাগে । ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কি কি লাগে

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *